কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা ৷৷ Healthybangaly

 কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা



সস্তা ও সহজলভ্য কলমিশাকের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম, লোহা ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। হেলেঞ্চা, থানকুনি, কচু ও পুঁইশাকের চেয়ে কলমিশাকে ভিটামিন বি-১ অর্থাৎ থায়ামিন রয়েছে পরিমাণে অনেক বেশি।
 
১০০ গ্রাম কলমিশাকে ১ দশমিক ৮ গ্রাম আমিষ, ৯ দশমিক ৪ গ্রাম শর্করা, শূন্য দশমিক ১৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১, শূন্য দশমিক ৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ অর্থাৎ রিবোফ্লোবিন, ৪২ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ১০৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩ দশমিক ৯ মিলিগ্রাম লোহা, ১০ হাজার ৭৪০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন ও ৪৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি রয়েছে।
 
আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কলমিশাকের নানা উপকারিতা—

কলমি শাকের উপকারিতা


১. কলমিশাকে থাকা ভিটামিন বি-১ স্নায়ুতন্ত্রকে সবল ও স্বাভাবিক রাখে। দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধনে সাহায্য করে।
 
২. কলমিশাকে অধিক পরিমাণে ক্যারোটিন থাকে। এ ক্যারোটিন থেকে আমাদের দেহে ভিটামিন-এ তৈরি হয়। চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে ভিটামিন-এ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
 
৩. কলমি শাকে থাকা প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি আমাদের দাঁত, মাড়ি ও পেশি মজবুত করে। এ ছাড়া ভিটামিন-সি সর্দি-কাশি ও ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করে দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
 
৪. কলমিশাকে থাকা ক্যালসিয়াম মানবদেহের হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে ভূমিকা পালন করে। গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য কলমিশাক অত্যন্ত উপকারী।
 
৫. কলমিশাকের পাতা ও কাণ্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ থাকে। আঁশ খাদ্য হজম, পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে কলমিশাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে।
 
৬. কলমিশাকের রস ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে সকাল ও বিকেলে দুবার খেলে প্রসূতি মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
 
৭. কলমিশাকের দুই চামচ রস একটু গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে

কলমি শাক চাষ পদ্ধতি

পূর্ব, দক্ষিণ, এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে কলমি শাকের চাষ করা হয়। প্রাকৃতিকভাবে পানিতে বা পানির ধারের ভেজা মাটিতে এই গাছ জন্মায়, আর বেশি যত্নেরও দরকার হয় না। মালয়ী ও চীনা খাবারে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। বাংলাদেশে এটি শাক হিসাবে বেশ জনপ্রিয়। কলমি শাক সাধারণত ভাজি হিসাবে রান্না করা হয়। এছাড়া ঝোল সহ মাছ দিয়েও রান্না করে খাওয়ার চল রয়েছে।

কলমি লতার উপকারিতা

১. ফোড়া হলে কলমি পাতা একটু আদাসহ বেটে ফোড়ার চারপাশে লাগালে ফোড়া গলে যাবে এবং পুঁজ বেরিয়ে শুকিয়ে যাবে।

২. পিঁপড়া, মৌমাছি কিংবা পোকামাকড় কামড়ালে কলমি শাকের পাতা ডগা সহ রস করে লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়। এছাড়া

৩. কোষ্ঠ কাঠিন্য হলে কলমি শাকের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।আমাশয়ও এ শরবত কাজ করে।

৪. গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে পানি আসে। কলমি শাক বেশি করে রসুন দিয়ে ভেজে তিন সপ্তাহ খেলে পানি কমে যায় অনেক ক্ষেত্রে।

৫. প্রসূতি মায়েদের শিশুরা যদি মায়ের দুধ কম পায় তাহলে কলমি শাক ছোট মাছ দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের দুধ বাড়ে।                              

 
কলমি শাক, কাঁচা
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
শক্তি৭৯ কিজু (১৯ kcal)
   শর্করা
৩.১৪ g
খাদ্য আঁশ২.১ g
  স্নেহ পদার্থ
০.২ g
  প্রোটিন
২.৬ g
ভিটামিনপরিমাণদৈপ%
ভিটামিন এ সমতুল্য
৩৯%
৩১৫ μg
থায়ামিন (বি)
৩%
০.০৩ মিগ্রা
রিবোফ্লাভিন (বি)
৮%
০.১ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
৬%
০.৯ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
৩%
০.১৪১ মিগ্রা
ভিটামিন বি
৭%
০.০৯৬ মিগ্রা
ফোলেট (বি)
১৪%
৫৭ μg
ভিটামিন সি
৬৬%
৫৫ মিগ্রা
খনিজপরিমাণদৈপ%
ক্যালসিয়াম
৮%
৭৭ মিগ্রা
লৌহ
১৩%
১.৬৭ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম
২০%
৭১ মিগ্রা
ম্যাঙ্গানিজ
৮%
০.১৬ মিগ্রা
ফসফরাস
৬%
৩৯ মিগ্রা
পটাসিয়াম
৭%
৩১২ মিগ্রা
সোডিয়াম
৮%
১১৩ মিগ্রা
জিংক
২%
০.১৮ মিগ্রা
   
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.