দম বন্ধ হয়ে আসলে করণীয়
রাতে ঘুমানোর সময় দম আটকে যায় কেন ও ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হওয়ার কারণ
ভেবে দেখুন তো ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে কী হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এ ঘটনা ঘটতে পারে। এ ধরনের অবস্থাকে স্লিপ এপনিয়া বলা হয়। টানা ০৮-১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় শ্বাস বন্ধ থাকলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
এই সমস্যা কাদের বেশি হয়
সাধারণত এটি বড়দের রোগ এবং শিশুরা এ ক্ষেত্রে খুব কম আক্রান্ত হয়। মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তবে বয়স ৪৫ পেরোলে মহিলা-পুরুষ সমানভাবে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যারা কোনো প্রকার পরিশ্রম করে না এ ধরনের লোকদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। তা ছাড়া হার্টের রোগসহ বেশ কিছু রোগ আছে যাতে আক্রান্ত হলে স্লিপ এপনিয়া হতে পারে।
এ রোগীরা সাধারণত একটু ঘুমালেই নাক ডাকতে থাকে।
কিভাবে হয়
বুঝতে হলে জানতে হবে আমরা কিভাবে শ্বাস নিই। নাক ও মুখ দিয়ে যে বাতাস গ্রহণ করি, তা শ্বাসনালি নামক লম্বা পথ দিয়ে বেরিয়ে ফুসফুসে গিয়ে পৌছায়। স্লিপ এপনিয়ার শুরুতে ঘুমের মধ্যে শ্বাসনালির পথ বন্ধ বা বাধাপ্রাপ্ত হয়। এ অবস্থায় রোগী একটু জোরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না। ফলে রোগীর ব্রেইন তখন বাধ্য হয়ে রোগীকে জাগিয়ে তোলে।
রাতে ঘুমানোর সময় দম আটকে যায় কেন
যখন ঘুমাই, তখন ব্রেইন শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে জড়িত মাংস-পেশিগুলোকে নির্দেশ দেয় শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য। অনেক সময় ব্রেইন এ ধরনের নির্দেশ পাঠায় না। তখন শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। অপরদিকে ব্রেইন হয়তো নির্দেশ পাঠাল, কিন্তু শ্বাসনালির পথ কোনো কারণে বন্ধ থাকল তখন শ্বাস নেওয়া সম্ভব হয় না। একইসঙ্গে দুরঘটনাও ঘটতে পারে অর্থাৎ ব্রেইন নির্দেশ পাঠাল না এবং শ্বাসনালির পথও বন্ধ থাকল। এমনকি আপনার মৃত্যু হতে পারে।
স্লিপ এপনিয়া কেন এত ভয়াবহ
স্লিপ এপনিয়া বেশির ভাগ সময় মারাত্মক কোনো রোগের সংকেত দেয়।
- হার্টের রোগ। যেমন : হার্ট ফেইলিউর, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন ইত্যাদি
- ব্রেইনের রোগ
- জন্মগত কোনো ত্রুটি
- কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- উচ্চ রক্তচাপ
- ঘুমের মধ্যে ভয় পাওয়া
দম বন্ধ হয়ে আসলে করণীয় চিকিৎসা
অনেক পরীক্ষা আছে, যেগুলোর সাহায্যে রোগের তীব্রতা নির্ণয় করা যায়। চিকিৎসা হিসেবে নিচের পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
- শোবার অভ্যাস পরিবর্তন। কারণ চিত হয়ে শুয়ে থাকলে স্লিপ এপনিয়া বাড়ে।
- ওজন কমানো। অবশ্যই মনে রাখবেন যে ১০ ভাগ ওজন কমালে স্লিপ এপনিয়া ২৫ ভাগ কমে যায়।
- সুষম খাবার গ্রহণ।
- নিয়মিত ব্যায়ামও বিভিন্ন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা একথাই পরিশ্রম করা।
এই আর্টিকেলটি যদি আপনার বিন্দু মাত্র উপকারে আসে তাহলেই আমার এই লেখালেখি সার্থক হবে ।
সুস্থ থাকুন সব-সময়।