ঘৃতকুমারী খাওয়ার নিয়ম ও ঘৃতকুমারী খাওয়ার উপকারিতা

ঘৃতকুমারী খাওয়ার উপকারিতা


ঘৃতকুমারী খাওয়ার নিয়ম ও ঘৃতকুমারী খাওয়ার উপকারিতা 

ঘৃতকুমারী খাওয়ার নিয়ম ও ঘৃতকুমারী খাওয়ার উপকারিতা

সৌন্দর্য বর্ধনে ভেষজ উদ্ভিদের ব্যবহার হয়ে আসছে সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই। আয়ুর্বেদ বলুন আর ইউনানি – ভেষজ উদ্ভিদের জয়জয়কার সর্বত্র! আমাদের খুব পরিচিত ঘৃতকুমারী এমনই একটি গুণী উদ্ভিদ। রাস্তার পাশে প্রায়ই কিছু লোককে দেখা যায় ঘৃতকুমারীর পাতা বিক্রি করতে। ঘৃতকুমারীর শরবতও বেশ বিক্রি হয় গরমের সময়।

কর্মজীবী মানুষদের দেখা যায় এই শরবত পান করে শরীর জুড়াতে। ঘৃতকুমারী একটি বহুজীবি ভেষজ চিকিৎসার উদ্ভিদ। দেখতে ফণিমনসা ক্যাকটাসের মতো হলেও এটা ক্যাকটাস নয়। আরো ভালো করে বললে ঘৃতকুমারী দেখতে ঠিক আনারসের গাছের মতো। পাতাগুলো চওড়া, পুরু ও গাঢ় সবুজ। পাতার দুপাশে করাতের মতো কাঁটা রয়েছে।

পাতার ভেতরে লালার মতো পিচ্ছিল শাঁস থাকে। ঘৃতকুমারী লিলিজাতীয় গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Aloe Vera। এটি Asphdelaceae (Aloe family) পরিবারের উদ্ভিদ। সারা পৃথিবীতে প্রায় ২৫০ ধরনের ঘৃতকুমারীর গাছ পাওয়া যায়। ঘৃতকুমারীর অ্যালোভেরা নামটি এসেছে সৌন্দর্য বর্ধনের দেবীর লাতিন নাম অ্যালোভেরা থেকে। সুদূর অতীতেও ঘৃতকুমারীর ব্যবহারের বেশ প্রমাণ পাওয়া যায়। রানি ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্যের মূল রহস্য নাকি ছিল এই অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী ।


ঘৃতকুমারী খাওয়ার নিয়ম ও ঘৃতকুমারী খাওয়ার উপকারিতা


ঘৃতকুমারীর নানা ধরনের গুণাবলী যা মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। 

১। নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস পান করলে, পরিপাকতন্ত্রের কার্যাবলি ভালো থাকে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। ঘৃতকুমারীর রস পানে ডায়রিয়াও সেরে যায়।

২। পরিশ্রম বা কাজ করার ফলে যেসব এনজাইম শরীরকে ক্লান্ত ও শ্রান্ত করে তোলে, ঘৃতকুমারীর রস তাদের ভারসাম্য রক্ষা করে শরীরের ক্লান্তি ও শ্রান্তি দূর করে।

৩। নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস পান করলে ইহা শরীরে শক্তি যোগায় ও ওজন ঠিক রাখে, কারণ এতে চর্বি কমানোর উপাদান রয়েছে।

৪। ঘৃতকুমারী শরীরে সাদা রক্তকণিকা গঠনে সহায়তা করে ও বিভিন্ন ভাইরাসের সাথে লড়াই করে।

৫। ঘৃতকুমারীর রস পানে হাড়ের সন্ধি সহজ হয় ও নতুন কোষ সৃষ্টিতে সহায়তা করে।

৬। ঘৃতকুমারীর রস নিয়মিত পান করতে চাইলে দিনে দুইবার করবেন এবং প্রতিবারে গ্রহণ করবেন ১০ মিলিলিটার। পাতার উপরের অংশ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে শুধু ভেতরের অর্ধস্বচ্ছ অংশের রস করে খাবেন। চাইলে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন তবে চিনি মেশাবেন না।

 ত্বকে এলোভেরার উপকারিতা

৭। রূপচর্চাতেও রয়েছে ঘৃতকুমারীর ব্যাপক অবদান। বিশেষ করে মেছতা নিরাময়ের ক্ষেত্রে। ঘৃতকুমারীর পাতা, শসা ও মধু একত্রে পেস্ট করে মেছতায় নিয়মিত লাগালে বেশ উপকার পাওয়া যায়। পাতার ভেতরের থকথকে অংশটা প্রতিদিন মেছতার ওপর লাগিয়ে মাসাজ করলে দাগ অনেকটাই হালকা হয়ে আসবে। রোদে পোড়া ত্বকেও ঘৃতকুমারী সমান কার্যকর।

৮। ঘৃতকুমারীর রস উপটান বা মুলতানি মাটির সাথে মিশিয়ে পোড়া অংশে লাগালে উপকার পাবেন। চালের গুঁড়ি স্ক্র্যাবার হিসেবে ব্যবহার করলে এর সাথে মেশাতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস। এতে ত্বক পরিষ্কারের পাশাপাশি হয়ে উঠবে কোমল ও উজ্জ্বল।

৯। খুশকি দূর করতেও ঘৃতকুমারীর জুড়ি নেই। এর রস সপ্তাহে দুদিন চুলের গোড়ায় লাগিয়ে দেখুন, মাত্র এক মাসে ফলাফল পাবেন! চুলে ঘৃতকুমারী নিয়মিত লাগালে চুলের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। চুল হয় মোলায়েম ও ঝরঝরে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.